
স্টাফ রিপোর্টারঃ রাজশাহী মহানগরীতে মেইন রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে দুই সাংবাদিককে মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
প্রসঙ্গতঃ গত ৫ সেপ্টেম্বর লাইভ চলাকালে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- বিএমডিএ কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংঘবদ্ধ হামলার শিকার হন এটিএন নিউজের রাজশাহী প্রতিনিধি বুলবুল হাবিব ও ক্যামেরাপার্সন রুবেল ইসলাম। এ ঘটনায় ৫ সেপ্টেম্বর রাতেই নগরীর রাজপাড়া থানায় বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদকে প্রধান আসামী করে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৮/১০ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়। এতে দু’জন গ্রেপ্তার হলেও প্রধান আসামী-সহ বাকিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এ ঘটনার একমাস পার না হতেই এবার বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসির নির্যাতনের শিকার হলেন দু’জন সাংবাদিক। গত (২৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে মহানগরীর নিউমার্কেটের সামনে অবস্থিত শিরোইল পুলিশ ফাঁড়ীর সামনে থেকে বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মোঃ মাজহারুল ইসলাম ও সঙ্গীয় ফোর্স তাদের আটক করেন।
পরদিন (২৮ নভেম্বর) দুপুর দেড়টায় মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন। ততক্ষনে আদালতের সময় শেষ। জামিন ধরার সুযোগও পাননি সাংবাদিকদের স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১১টার দিকে তাদের জামিনে মুক্তিদেন এমএম-১ রাজশাহীর বিজ্ঞ আদালত।
জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত সাংবাদিক দু’জন হলেন, রাজশাহী থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাংলার বিবেক পত্রিকার ফটো সাংবাদিক মোঃ মামুনুর রহমান এবং সাপ্তাহিক বাংলার বিবেক ও জাতীয় দৈনিক সময়ের কাগজ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মোঃ মাসুদ আলী পুলক।
এরপর দুপুর সাড়ে তিনটায় তাদের জেলগেটে ফুলের মালা পরিয়ে বরন করেন সহকর্মী বিভিন্ন গণমাধ্যেমের সাংবাদিকবৃন্দ।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক মোঃ মামুনুর রহমান ও মোঃ মাসুদ আলী পুলক জানায়, ব্যক্তিগত কাজে তারা তাদের এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে নিউমার্কেট এলাকায় যায়। কিন্তু বন্ধুর সাথে দেখা হওয়ার আগেই তাদেরকে আটক করেন ওসি। আটকের কারন জানতে চাই সাংবাদিক পুলক, উত্তরে ওসি বলেন ফেসবুকে আমার নামে স্ট্যাটাস দাও এতবড় সাহস। যা ইচ্ছা আরও লিখেন। এখন গাড়িতে ওঠেন। আমাদের অপরাধ ? এমন প্রশ্নে উত্তরে ওসি বলেন, একটু আগে মারামারি করেছেন মামলা দিবো আদালতে প্রমান করেন। এরপর তাদেরকে পিকআপ যোগে থানায় নিয়ে হাজতে রাখেন।
রাজশাহী রিপোর্টার্স ইউনিটির নির্বাচিত সভাপতি আব্দুল মুগণী নীরো বলেন, পুরো রাজশাহী মহানগরীতে সকল প্রকার আপরাধ দমনে আরএমপি পুলিশ কমিশনার মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক এর দিক নির্দেশনায় সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। এর সাফল্য ভোগ করছেন জনগণ। তাছাড়াও আরএমপির আওতায় সংগঠিত যে কোন অপরাধ সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধী সনাক্ত করছেন এবং আইগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। এরমধ্যে কেউ কোন মামলা দিলে ভিডিও ফুটেজ না দেখেই মামলা আমলে নিচ্ছেন এটা রিতীমত হয়রানী।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এবং পুলিশের আইজিপি মহোদয় অকারনে সাংবাদিককে হয়রানী না করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এবিষয়ে বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, সাংবাদিকদের কাজই হল খবরের পেছনে ছুটে চলা। তারা খবর সংগ্রহ করতে ছুটবেই। আমরা তো সাংবাদিকদের কোন দোষ খুঁজে পাচ্ছি না।
তারপরও অনুসন্ধান, তথ্য প্রমান ও তদন্ত না করে কিভাবে সাংবাদিককে আটক করলেন ওসি। এই নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিক হয়রানী বন্ধে আরএমপি পুলিশ কমিশনার এর সৃদৃষ্টি কামনা এবং ভিডিও ফুটেজ দেখে এই মামলার প্রকৃত আসামীদের চিহ্নিত করা হোক। সেই সাথে ওসির ব্যক্তিগত অক্রোশের শিকার সাংবাদিকদের দ্রুত চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার দাবি জানান এই সাংবাদিক নেতা।
অন্যথায় সকল সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে মানববন্ধন সহ শান্তিপূর্ণ কঠোর কর্মসূচি নিয়ে শিঘ্রই রাস্তায় দাড়াঁবেন বলেও জানান এই সাংবাদিক নেতা।