16 C
New York
বুধবার, এপ্রিল ১৭, ২০২৪
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

যুবশক্তি বলতে পেশিশক্তি নয়, বোঝালেন নেত্রী

নিউজ রাজশাহী ডেস্কঃ নিত্য পথচলায় প্রিয় দুপুরের ক্ষণ ব্যস্ততায় পার হয়। উদাসী দুপুর ধরা দেয় না। যে দুপুর রাগাশ্রয়ী সুরের ধ্বনিতে মনকে নস্টালজিক করবে, বাস্তবতা তা উপহার দেয় না। তবে, ইচ্ছে করে। ইচ্ছে এও করে, যখন বাংলার সবুজ প্রান্তরে রক্ত দিয়ে লাল সূর্য হয়ে আমাদের পূর্বপুরুষেরা এখনো আলোর বিচ্ছুরণে থেকে আত্মার উপস্থিতি ঘটিয়ে বলছে, কেমন আছে বাংলাদেশ? তেমন মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষাৎপ্রার্থী হয়ে ছুটে গিয়েছিলাম ১১ নভেম্বর ২০২২, সেই দুপুর করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

এক নিবন্ধে এসব কথা লিখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। নিবন্ধটি তুলে ধরা হল:

বারবার করে মনে হচ্ছিল, বঙ্গবন্ধুর কথা। ভাষণ রেখে শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা হওয়ার অসাধারণ সত্তাও যেন তিনিই ছিলেন। পুরো বিশ্বের মধ্যেই তা হবে। মন আর চোখ নিয়ে খেলা চলছিল। বুকের মধ্যে অজানা ব্যথা। তবে উচ্ছ্বাসও ছিল। তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে লক্ষ লক্ষ যুবকেরা বারবার করে বলছিল, জয় বাংলা ! জয় বাংলার ধ্বনির মত করে কোন সুর কী আর হতে পারে ?

এদিকে দুপুর গড়িয়ে যখন বাংলায় নাতিশীতোষ্ণ বিকেল ধরা দিচ্ছিল , ওই অসাধারণ লোকটার তনয়া শেখ হাসিনা মঞ্চে ফিরলেন ভাষণ নিয়ে। তিনি আমাকে অবাক করলেন। লক্ষ লক্ষ যুব জনতা যখন তাঁর সামনে, তিনি কিনা বাংলাদেশ বিনির্মাণের কথা শুনিয়ে বললেন, সৎ কর্ম করেই বাংলাদেশের জন্য সেরাটা দিতে হবে। অথচ, আমি হলে কী করতাম ? চারিদিকে যখন রাজনৈতিক অপশক্তির খোলসে হায়েনারা ছোবল দিতে চাইছে, তখন উপস্থিত লক্ষ লক্ষ যুবকদের নিয়ে হয়তো বলতাম, চলো, তাদের নিধন করি ! কিন্তু, এখানেই আমাদের নেত্রীর সাথে আমার ও আমাদের পার্থক্য। শেখ হাসিনা পুনরায় প্রমাণ করলেন, যুবশক্তি বলতে পেশিশক্তি নয়।

শেখ হাসিনা বললেন, ‘যুবলীগের জন্য আমার আহ্বান থাকবে, দেশগড়ার কাজে মনোযোগী হতে হবে। যেমন করোনা মোকাবিলায় কোনো উন্নত দেশও দিতে পারেনি, বিনা পয়সায় আমরা ভ্যাকসিন দিয়েছি। বিনা পয়সায় টেস্ট করেছি। কোনো উন্নত দেশও দিতে পারেনি। ঠিক তেমনিভাবে আমাদেরকে দেশের সেবা করতে হবে, মানুষের সেবা করতে হবে। সেজন্যই যুব সমাজকে অনুরোধ করবো, যেহেতু ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন কাউন্টার স্যাংশন। যার ফলে বিশ্ব বাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। যেগুলো আমদানি করে আনতে হয় সেগুলো এখন অত্যন্ত কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। আমাদের পরনির্ভরশীল থাকলে হবে না আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। তাই আমি আহ্বান করেছি, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে।’

শেখ হাসিনা তাগিদ রেখে বললেন, ‘নিজের গ্রামে যান, নিজের জমি চাষ করতে হবে। অন্যের জমিতেও যেন উৎপাদন হয় সেই ব্যবস্থাটা প্রত্যেকটা যুবলীগকে করতে হবে। যখন সারা বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি, বাংলাদেশে ইনশাআল্লাহ কোনো দুর্ভিক্ষ হবে না। তার জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।’

সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ, মাদক দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার জন্য, এ সব থেকে যেন যুব সমাজ দূরে থাকার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কোনো মতেই যেন সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ বা দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। তার জন্য যুবলীগের প্রতিটা নেতাকর্মীকে নিজেদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে, কাজ করতে হবে। যুব সমাজের মাঝেও সেই চেতনা গড়ে তুলতে হবে। সেই চেতনায় বাংলাদেশের উন্নতি হবে। কারণ উৎপাদন বৃদ্ধি মানেই বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবে।

যতদূর কাল দৃষ্টি রাখা গেছে, মানুষ আর মানুষ দেখা গেছে। যুবলীগকেও অভিনন্দন ! বর্তমান নেতৃত্ব প্রমাণ করতে পেরেছে, তাঁরা দেশের প্রশ্নে এখনো এককাট্টা। আমি আমার রাজনৈতিক পথচলাও ফলত যুবলীগ দিয়েই শুরু করেছিলাম। লিখিত ধারাভাষ্যের শুরুতে পূর্বসূরীদের কথা বলছিলাম। কালকের যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বিশেষ আয়োজন দেখে শহীদ শেখ মনিকে মনে করতে হয়নি। মনে হয়েছে, তিনিও আমাদের মাঝে আছেন। অন্যদিকে একজন শেখ হাসিনা পুনরায় প্রমাণ করলেন, দেশাত্মবোধের প্রশ্নে তাঁর চেয়ে বড় কোন সত্তা দেশে নেই। যেখানে তিনি লক্ষ লক্ষ তরতাজা যোদ্ধা পেলেন, কিন্তু তাঁদেরকে বললেন, তোমরা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য যুবশক্তি হয়ে লড়বে। অথচ, তিনি যদি একবার বলতেন, যাও রাজনৈতিক অপশক্তি দমনে ময়দান ছেড়ো না। তাহলে কী হত !

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির জনকের সকল মানবিক গুনই পেয়েছেন। ক্ষমা করতে জানেন তিনি। মন তাঁর সত্যিকারের উদারতায় বসবাস করে। অজামিনযোগ্য একজন আসামীকে সম্মান দেখিয়ে নিজ আবাসে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এমন সংস্কৃতি কি সাক্ষ্য দেয়? যখন আজ দেশব্যাপি কৃত্রিম আন্দোলনের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে কথিত প্রতিপক্ষ, তখনও তিনি ধীর স্থির থেকে বলেছেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে আছে, থাকতে হবে। হ্যাঁ, সাম্প্রতিক সময়ে তিনি বলেছেন, বাড়াবাড়ি করলে বিএনপি নেত্রীকে জেলে ঢুকতে হবে। অতি অবশ্যই তা করতে হবে। সেই বাড়াবাড়ির সংজ্ঞা বা ধর্মটা কি ? বাড়াবাড়ি হল, আগুন সন্ত্রাস করা যাবে না, মানুষ হত্যা আর করা যাবে না, আস্তিক শক্তি ও অপশক্তিদের মাধ্যমে যেন জানমালের ক্ষতি সাধন না হয়— সেটার প্রতিঅর্থ হিসাবে ‘বাড়াবাড়ি’ উল্লেক্ষিত হয়েছে বলে মনে করার সুযোগ আছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বাঙালি জাতির রাজনৈতিক মনবোধের সেই ময়দান, যার নির্যাস থেকে শুধু আবেগ কে চুম্বন করা যায়। বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা। তাঁরা উভয়েই এই উদ্যানের বাংলার রাজনীতির আসল সৌন্দর্য । আমরা শুধু পরখ করে বলতে পারি, ভাল আছি, ভাল থাকতে চাই। রাজনৈতিক সৈনিক হিসাবে দেশকে কিছু দিতে চাই—–এমন প্রতিজ্ঞায় এগারো নভেম্বরের বিকেলের শেষ দিকটায় ছিলাম। একপর্যায়ে, চারপাশ তাকিয়ে উদ্যানের একপ্রান্ত থেকে অপরাহ্ণের আলোও বলছিল, বাংলাদেশের তরুন, যুবক ও অনাগত প্রজন্মের জন্য তুমিও সেরা কিছু কর।

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
আজকের রাজশাহী
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

বিনোদন

- Advertisment -spot_img

বিশেষ প্রতিবেদন

Discover more from News Rajshahi 24

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading