15.5 C
New York
সোমবার, এপ্রিল ১৫, ২০২৪
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

পত্রিকায় সংবাদ করে লাভ হবে না বলে দাম্ভিকতা প্রকাশ, মাদক মাফিয়া শীষ মোহাম্মদের

নিউজ রাজশাহী ডেস্কঃ পতিকায় সংবাদ প্রকাশ করে লাব হবে না। গোদাগাড়ী থানার ওসি আমাদের ধরতে আসবে না। এমনি বক্তব্য মাদকের রাজধানী রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার শীর্ষ মাদক মাফিয়া “গড ফাদার” শীষ মোহাম্মদের। সম্প্রতী তিনি এমন বক্তব্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারই এক ঘনিষ্ঠজন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ব্যক্তি বলেন, গোদাগাড়ী জেলা থেকে কেজি , কেজি হেরোইন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাচার হচ্ছে। নেপথ্যে থেকে চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করছে মাদক মাফিয়া শীষ মোহাম্মদ। একধিক মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামী এই মাদক মাফিয়া শীষ মোহাম্মদ। বর্তমানে শীষ মোহাম্মদ রাজশাহী মহানগরীতে অবস্থান করছে। মহানগরীতে রয়েছে একাধিক বাড়ি। সিটি ভবনের পাশে সানডায়াল কোচিং সেন্টারের গলির একটি ভবনে রয়েছে সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রিত আলিশান চেম্বার। সেই চেম্বারে বসে মদ পান করা আর কোটি কোটি টাকার হেরোইনের চালান নিয়ন্ত্রণ করাই তার শীষ মোহাম্মদের কারবার বলে জানা গেছে।

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, তিনি কয়েকটি মোবাইল ব্যবহার করেন। আর কথা বলার সময় বিভিন্ন কোর্ড ব্যবহার করেন। তার খুব কাছে থেকেও তার কথা কেউ বুঝতে পারবে না।

গোদাগাড়ীর সমমানের মাদক মাফিয়া শহীদুল ইসলাম ভোদড়। তারও একই কর্মকান্ড। শিদ্ধ ডিম ব্যবসায়ী থেকে এরশাদ শিকদারের ন্যায় নির্মান করেছেন স্বর্ণ কোমল বাড়ী। কিনেছেন শত শত বিঘা জমি। হয়েছেন হাজার কোটি টাকার মালিক। রাজশাহীতেও রয়েছে একাধিক বাড়ি।

প্রশাসনের সর্বচ্চো কর্তা-ব্যক্তিরা মাদক নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন সভা সেমিনার করছেন। মাদকের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন, জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছেন।

অপর দিকে মাদক কারবারিদের কর্মকান্ড তুলে ধরে সাংবাদিক সংবাদ প্রকাশ করলেই যত দোষ।

মাদকের রাজধানী গোদাগাড়ীতে তালিকাভুক্ত ১৯৮ জন মাদক ব্যবসায়ী বীর দাপটে চলাচলা করলেও রহস্যজনক কারণে প্রশাসন রয়েছে নিরব।

মাঝে মধ্যে পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও র‌্যাবের হাতে কেজি কেজি হোরোইনসহ মাদকের ছোট-বড় চালান আটকও হচ্ছে। তবে আটককৃতদের মধ্যে অধিকাংশই মাদক বহনকারী লেবার ও গডফাদাদের কর্মচারী। আর যেসব গডফাদাররা কোটি কোটি টাকার হেরোইন সহ বিভিন্ন মাদকের চালান নিয়ন্ত্রণ করছে তারা সব সময়ই থাকছে ধরা ছোয়ার বাইরে। পর্দার আড়ালে।

গোদাগাড়ির উল্লেখ যোগ্য মাদকের ডিলার ও গডফাররা হলো: গোদাগাড়ী থানার জনৈক শহিদুল ইসলামের নাসির। একই থানার বারুই পাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে হোসেন আলী, মাদারপুর গ্রামের আব্দুল গনি’র ছেলে গোলাম মোস্তফা টিয়া, ইসরাইলের ছেলে ইবরাহীম মহিশাল বাড়ি সাগর পাড়া গ্রামের নাজিমুল ইসলামের ছেলে রায়হান ওরফে ভ-ল, মহিশাল বাড়ি সাগর পাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে সনি, মহিশাল বাড়ি সাগর পাড়া গ্রামের মৃত: আবুল হোসেনের ছেলে হেলাল উদ্দিন, একই এলাকার মৃত মুরশেদ ফাটার ছেলে সাদিকুল ইসলাম।

জনৈক মোঃ মেকাইল, মোঃ গোলাম মোস্তফা, মোঃ সিরাজ, মোঃ আমিনুল ইসলাম বাবু , মোঃ আব্দুল করিম, মোঃ শফিকুল ইসলাম লুঠু, মোঃ বিপ্লব , মোঃ মইদুল ইসলাম ন্যাংড়া, মোসাঃ নুর নাহার, মোসাঃ মরিয়ম, মোসাঃ ফুরকান, মো হৃদয়, মোঃ আরিফ, মোঃ পিয়ারুল, মোঃ রবি , আনারুল হাজী , মোঃ জোহাক , মোঃ জিয়া, মোসাঃ সুইটি, মোঃ ধুলা , মোঃ মানিক , মোঃ আব্দুল্লাহ , মোঃ ভনডল , মোঃ বিসু, মোঃ সাগর ,মোঃ ইসাহাক , মোঃ নাহিদ , মোঃ টিপু , মোঃ সোহেল।

গোদাগাড়ী থানার ৬নং মাটিকাটা ইউনিয়নের প্রেমতলী, পিরিজপুর, গোপালপুর, সোনাদিঘী, কালিদিঘী সহ পুরো এলাকার মাদক সিন্ডিকেটের মূল হোতা শফিউর রহমান শুভ, শুভোর আপন ভাই সনি, উভয়ের পিতা: আব্দুল হামিদ (সাবু) , নূরু মাঝি ও তাদের সহযোগী, সুজন, সোহাগ, মশিউর, সোহাগ-২, বাকি সহ ৭/৮জন।

সরেজনি গিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ দিনের অভিযোগ গোদাগাড়ী উপজেলায় মশালবাড়িতে দিনরাত ২৪ ঘন্টাই চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। পুলিশ, ডিবি, র‌্যাব সহ আইনশৃঙ্খলার বাহিনীগুলো প্রতিনিয়ত অভিযান চালাচ্ছে এবং প্রচুর পরিমাণে মাদক উদ্ধার করলেও তারপরও থেমে নেই মাদক ব্যবসা। কেই প্রকাশ্যে আবার কেউ গোপনে চালাচ্ছে মাদক কারবার।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারীরা হাতে মাদক ধরেনা। যাবতীয় লেনদেন তারা তাদের লেবার এবং কর্মচারীদের দিয়ে করিয়ে থাকেন। ফলে তারা সব সময়ই ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসব মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আর এ ভাবেই পর্দার আড়ালে থেকে মাদক নিয়ন্ত্রণকারিরা এবং মাদক কারবারিরা হয়ে উঠেছেন বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক। এরা এতই প্রভাবশালী যে, তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলবে এমন কাউকে টর্চ লাইট জ্বালিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবেনা।

জানতে চাইলে জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর), মোঃ ইফতেখায়ের আলম বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স রয়েছে। চলছে অভিযান। ছাড় পাবে না কেউই। পর্যায়ক্রমে সকল তালিকাভুক্ত মাদক কারবারিদের আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে।

সম্প্রতী, চলতি মাসের (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় রাজশাহী কলেজ অডিটোরিয়ামে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকাসক্তির প্রকৃতি ও আমাদের করণীয় শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠিত প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, মানবসভ্যতার প্রতি মারাত্বক হুমকি সৃষ্টিকারী দেশের অন্যতম অভিশাপ মাদকাসক্তি। মাদকদ্রব্যের নেশার ছোবল এমনই ভয়ানক যে, তা ব্যক্তিকে পরিবার, সমাজ দেশ থেকেই বিচ্ছিন্ন করে না বরং তা সমগ্র জীবন ধ্বংস করে দেয়। মাদক সমাজ, জাতি ও রাষ্ট্রেরই ক্ষতি করে না, সভ্যতা ও সংস্কৃতিকেও বিপন্ন করে। মাদক শুধু একজন যুবকের মেধা ও সুপ্ত প্রতিভার বিকাশের প্রতিবন্ধক নয় বরং মাদক একজন যুবকের ধ্বংসের অবলীলা ও মারাত্বক পরিণতির দিক ঠেলে দিয়ে তাকে চিরতরে ধ্বংস ও অকেজো করে দেয়। তার মূল্যবান জীবনটা নষ্ট হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, একটি রাষ্ট্র ও সমাজকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে সংগঠিত করতে হলে আগে সেই রাষ্ট্রের যুবসম্প্রদায়কে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল রাখতে হবে। তাই তো যুব সম্প্রদায়কে বলা হয় রাষ্ট্রের প্রাণ। যুবসমাজ আমাদের বড় একটা শক্তি। পৃথিবীর অনেক দেশ এখন বয়োবৃদ্ধদের দেশে পরিণত হয়েছে। আমরা সেটা হতে চাই না। তিনি উপস্থিত শিক্ষার্থীদেরকে জীবন গঠনে সতর্ক হয়ে চলতে এবং নিজেকে মানব সম্পদে পরিণত হতে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন এবং মাদক থেকে দূরে থাকার আহ্ববান জানান।

“সমাজের সকল সামাজিক, অসাজিক, বৈধ, অবৈধ, সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের ভোগান্তিসহ নানা বিষয় তুলে ধরে সংবাদ প্রকাশ করাই সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব। আর এই পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শত্রু হচ্ছে এক শ্রেণীর অসাধু পুলিশ ও অবৈধ মাদক সিন্ডিকেটের গড-ফাদাররা। সাংবাদিকরা জিবনের ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন। আর অসাধু চক্রের কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের আয় বাড়ে। চরম বাস্তবতা জেনেও হাল কাউকে না কাউকে তো ধরতেই হবে। আমি না হয় এই ঝুঁকিটা নিলাম। বাঁচবো কয়দিন। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যুব সমাজ, ছাত্র সমাজকে বাঁচাতে আমার কলম যুদ্ধ চলবেই। আজ যারা ঝুঁকি নিয়ে এসকল মাদক মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করছে। তাদের নিরাপত্তাও কম। তারপরও নীতি, নৈতিকতা বিসর্জন দেয়া মানব সভ্যতার কাজ হতে পারে না। সংবাদ প্রকাশে সাংবাদিক বদ্ধ পরিকর ও অঙ্গীকারবদ্ধ”।

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
আজকের রাজশাহী
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

বিনোদন

- Advertisment -spot_img

বিশেষ প্রতিবেদন

Discover more from News Rajshahi 24

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading