
সারোয়ার জাহান বিপ্লবঃ উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের জন্মদিন আজ। বাংলা ছোটগল্পের এ বরপুত্র ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত বাংলার বর্ধমানের যবগ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর প্রস্থান হয় আগুন পাখির।
প্রখ্যাত এ কথাসাহিত্যিকের জন্মদিনে রাজশাহীর কোনো সংগঠনের কোনো আয়োজন নেই। তবে হাসান আজিজুল বেঁচে থাকা অবস্থায় অনেক সংগঠনই বেশ ঘটা করে পালন করেছিল তার জন্মদিন।
শুধুমাত্র ছেলে রাবি শিক্ষক ইমতিয়াজ হাসানের দেওয়া ফুলটিই পড়ে আছে তার কবরের পাশে। পরিস্থিতি দেখে মনে হতেই পারে, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের মৃত্যুর পর অনেকেই তাকে ভুলে গেছেন।
ইমতিয়াজ হাসান বলেন, আজ বাবার জন্মদিন। কোনো জায়গাতেই কোনো অনুষ্ঠান নেই। আমার সঙ্গে কোনো সংগঠন বা কারও যোগাযোগ হয়নি। আমি ব্যক্তিগতভাবে কবরে ফুল দিয়ে এসেছি। আর কোনো প্রশাসন বা সাংস্কৃতিক সংগঠন কোনো আয়োজন করছে এমন কোনো খবর আমি জানি না। আমন্ত্রণও পাইনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা তো আর দাবি করতে পারছি না জন্মদিনে কোনো আয়োজন নেই কেন। মন থেকে যদি কেউ আয়োজন করতো আমরা খুশি হতাম। না করলে কিছু বলার নেই।
সাধারণত হাসান আজিজুল হকের জন্মদিন বেশ ঘটা করে পালন করে কবি কুঞ্জ। কিন্তু এবার তাদেরও নেই কোনো আয়োজন।
রাজশাহী কবি কুঞ্জের সাধারণ সম্পাদক কবি আরিফুল হক কুমার বলেন, উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের জন্মদিন আজ। তবে এ উপলক্ষে আমাদের কোনো কর্মসূচি নেই।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩১ বছর শিক্ষকতা করেছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি চত্বরেই তার কবর। তবে রাবি প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়নি কোনো আয়োজন।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ প্রশাসক ড. প্রদীপ কুমার পান্ডে বলেন, হাসান আজিজুল হকের জন্মদিন উপলক্ষে রাবিতে আজ কোনো আয়োজন নেই।
হাসান আজিজুল হকের শেষ সময়ে সব থেকে কাছাকাছি ছিলেন রাবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সাজ্জাদ বকুল। আজকের এ দিনে আয়োজন নেই জেনে তিনি বেশ কষ্ট পেয়েছেনে।
এ শিক্ষক বলেন, গত বছরের ১৫ নভেম্বর হাসান আজিজুল হকের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেছি। তবে তার জন্মদিন আগে যেভাবে স্মরণ করা হতো সেভাবে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্মরণ করলো না এটা আমার কাছে বেশ কষ্টদায়ক বটে। যদিও হাসান আজিজুল হককে স্মরণ করার আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজন নাই। তিনি আমাদেরে মাঝে প্রবলভাবেই বিরাজ করেন। এরপরও আনুষ্ঠানিকতা বলে কিছু থাকে। এ মাপের একজন মানুষকে আমার যদি নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে না পারি, এইরকম একটি দিনে যদি কোন আয়োজন না করতে পারি তবে তারা হাসান আজিজুল হক সম্পর্কে সেভাবে হয়তো জানতে পারবে না।
তিনি মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে তার সমাধি আছে সেখানে ছোটখাটো হলেও একটি আয়োজন করা যেত। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা হাসান আজিজুল হক সম্পর্কে জানতো। নতুন করে উৎসাহী হতো। এ জায়গাটাতে একটু ঘাটতি পড়লো। আজকে আমি ট্রেনিংয়ের জন্য ঢাকায় যাচ্ছি। এ মুহূর্তে ট্রেনে আছি। তবে অন্য সংগঠনগুলো এর আয়োজন করতে পারতো। সব মিলিয়েই আজকে খারাপই লাগছে। আমার জানা মতে কোন সংগঠন আয়োজন করেনি।