8.3 C
New York
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

রাজশাহীতে ১৪৫ ধারা উপেক্ষা করে জমি দখলের চেষ্টা! পুলিশের হস্তক্ষেপে পন্ড

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীতে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক ঘোষিত ১৪৫ ধারা অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে এক ডাক্তরের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকে মহানগরীর মাহমখদুম থানাধিন বড়-বনগ্রাম এলাকায় স্থায়ী দখলের লক্ষে জমিটির উপর কলম ঢালাই কার্যক্রম করছিলো ইমারত নির্মান মিস্ত্রি ও শ্রমিকরা ।
বিষয়টি পুলিশকে অবগত করা হলে দুপুর ৩টায় মহানগরীর শহমখদুম থানার এসআই মোঃ নাসির উদ্দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। এ সময় তিনি বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক ১৪৫ ধারা সকলের উপস্থিতে জারি করেন। এছাড়াও উপস্থিত সকলকে আগামী (২৩ মার্চ) পর্যন্ত কোন প্রকার কার্যক্রম না করা জন্য শতর্ক করেন। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জমির মালিক ভূক্তভোগী হাবিবুল্লাহ্ আল ইমরান ও একাধিক গণমাধ্যম কর্মীরা।
ভূক্তভোগী জমির মালিক হাবিবুল্লাহ্ আল ইমরান (৪৯)। তিনি জানান, ১৯৬৪ সালে আমার দাদা মৃত পাতান আলী শাহ্ ও তার ভাই আসগর আলী শাহ্ বড় বনগ্রাম মৌজায় ২.৬৯ একর (৮ বিঘা ৩ কাঠা) জমি ক্রয় করেন। এরপর ১৯৭৭ সালে আমার দাদা মারা গেলে পৈত্রিক সূত্রে ওই জমির মালিকানা লাভ করেন আমার পিতা মৃত ইমরান আলী। আমার বাবা ১৯৯৭ সালে পরলোক গমন করেন। সেই থেকে পৈত্রিক সূত্রে আমি এবং আমার ভাই আব্দুল্লাহ আল ইমরান (৫১) ও আমার বড় বোন ইয়াসমিন সুলতানা (৫৩) মোট ৪বিঘা ১কাঠা অর্থাৎ (১.৩৪৫০ একর) জমির মালিকানা লাভ করি। এরপর আমার দুই ভাই ও এক বোন মিলে জমিটি ওয়ারিশ সূত্রে বন্টন করে সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসে নামজারি করে নিজ নিজ নামে খারিজ করি। আমরা নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে আসছি।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতী, ডাক্তার এনামুল হক একই জমিতে নিজ নামে খারিজ দেখিয়ে জমির মালিকানা দাবি করছেন। গত সোমবার জমিটির উপর ইমারত নির্মানের লক্ষ্যে ভরাট ফেলছেন। কিন্তু রাজশাহী জেলা প্রশাসকের হুকুম দখল শাখা এল.এ কেস নং-১/২০০২-২০০৩, হুকুম দখল মামলায় সরকার আরএস-৩০২৭ নং দাগের ৯ শতাংশ (৬ কাঠার একটু কম) জমি অধিগ্রহণ করেন।
অধিগ্রহণ করা জমিটি নওদাঁপাড়া বাস টার্মিনাল হতে ভদ্রা মোড় পর্যন্ত মহাসড়ক হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। সেই রাস্তার মধ্যে মূলত ডা. এনামুল হকের জমি রয়েছে বলে দাবি করেন হাবিবুল্লাহ্ আল ইমরান।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে ডা. এনামুক হক বলেন, ২০১৭ সালে তহমিনা ও আনোয়ারা নামের দুই নারীর কাছ থেকে (২২.১০) ১৩ কাঠা জমি ক্রয় করি। তবে আমার জমিটি মহাসড়কের জন্য সরকার অধিগ্রহণ করে নাই। আমার জমিতে কোন প্রকার ত্রুটি নাই। আমি ইতিমধ্যেই আরডিএ’ কর্তৃক প্ল্যান পাস করেছি। সেখানে একটি চক্ষু হাসপাতাল নির্মান করা হবে। সেই লক্ষেই কার্যক্রম শুরু করেছি। আমার জমিতে কোন ওয়ারিশ থাকলে দ্বিধা করবো না জমি ছেড়ে ছেবে।
চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য সকল শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে সহযোগী কামনা করেন তিনি ।
এ ব্যপারে রাসিক (১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর) মোঃ সাহাদত আলী শাহু’র দারস্থ হয়েছিলাম। তিনি আমার জমির সম্পর্ণ কাগজপত্র দেখেছেন। বলেছেন, আপনার কাগজপত্রে কোন সমস্যা নাই, কাজ শুরু করে দেন। তার নিদের্শেই কাজ শুরু করেছি। কাজের দেখভাল ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী সাপ্লাই দিচ্ছে শাহীন।
এদিকে, বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারী) সকালে ভুক্তভোগীর আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক (এডিএম) জমিটির উপর ১৪৫ ধারা জারি করেন।
তারপরও সেই আদেশ উপেক্ষা করেই ডাক্তারের নির্দেশে ইমারত নির্মানের কাজ করছিলো মিস্ত্রি ও শ্রমিকরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি শাহমখদুম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশানার (ডিসি) নূরে আলম সিদ্দিকিকে অবগত করা হলে তিনি ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসদেন। যেমন কথা তেমন কাজ। ১৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছান এসআই নাসির উদ্দিন। বন্ধ করে দেন শ্রমিকদের দ্বারা দখল কার্যক্রম প্রক্রিয়া। সেই সাথে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আগামী (২৩ মার্চ ২০২৩) পর্যন্ত জমিটির উপর কোন প্রকার কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না বলে উপস্থিত সকলকে অবগত করেন।
জানতে চাইলে শাহমখদুম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, ১৪৫ ধারা ভঙ্গের দায়ে ১৮৮ ধারায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ আইনের উর্দ্ধে নয়। নালিশি সম্পত্তির জমিটির উপর তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ নাসিরকে পাঠনো হয়েছে। ১৪৫ ধারা জারি করেছে সে। তারপরও আইন ভঙ্গো করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ওসি।

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
আজকের রাজশাহী
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

বিনোদন

- Advertisment -spot_img

বিশেষ প্রতিবেদন

error: Content is protected !!

Discover more from News Rajshahi 24

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading