
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিভকে ছিন্নভিন্ন করছে রাশিয়া। অহরহ মিসাইল হামলা চলছে। কখনও বাড়িঘরের উপরে, কখনও স্কুলে, হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলছে। আকাশে চক্কর কাটছে রাশিয়ার বোমারু বিমান। এতেই শান্তি হয়নি। এবার কিভের আকাশে ঝাঁকে ঝাঁকে গুপ্তচর বেলুন পাঠিয়েছে রাশিয়া। কয়েকটিকে গুলি করে নামিয়েছে ইউক্রেনের সেনা।
বুধবার কিভের আকাশে অসংখ্য বেলুন দেখেই সতর্কতামূলক সাইরেন বাজে। রাশিয়া বিমান হামলা করতে পারে ভেবে সতর্ক হয় ইউক্রেনের বিমান বাহিনীও। আকাশপথে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হলে তার প্রতিরোধী ব্যবস্থাকেও প্রস্তুত করে রাখা হয়। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, কিভের আকাশে ৬টি গুপ্তচর বেলুনকে গুলি করে নামানো হয়েছে। মূলত ডনবাস এলাকাতেই সবচেয়ে বেশি গুপ্তচর বেলুনের আনাগোনা শুরু হয়েছে। এই এলাকা দখলের জন্য প্রথম থেকেই মরিয়া রুশ সেনা। তবে ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রত্যাঘাতে পিছু হঠতে হচ্ছে তাদের।
কিছুদিন আগে আমেরিকার পরমাণু অস্ত্র তৈরির কারখানার কাছাকাছি আকাশে চিনা গুপ্তচর বেলুনকে উড়তে দেখা গিয়েছিল। চিন যদিও দাবি করেছিল আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি জানার জন্য সেই বেলুন ওড়ানো হয়েছিল। তবে পেন্টাগন দাবি করে, আমেরিকার অস্ত্রভাণ্ডারে উঁকিঝুঁকি দিতেই গুপ্তচর বেলুন পাঠিয়েছিল চিন।
এই গুপ্তচর বেলুন হল হিলিয়াম গ্যাসে ভরা বেলুন যা চলে সৌরশক্তিতে। খুব কায়দা করে বেলুনে সৌর প্যানেল জুড়ে দেওয়া হয় যা বেলুনকে ওড়ার শক্তি জোগায়। এতে সেন্সর, রেডার লাগানো থাকে। হাই-রেজোলিউশন ক্য়ামেরা ফিট করা থাকে বেলুনের সঙ্গে যা পরিষ্কার, ঝকঝকে ছবি তুলতে পারবে। এর সেন্সরে ধরা পড়বে কোথায় অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে, কোথায় গোপনে সামরিক কার্যকলাপ চলে। পারমানবিক অস্ত্র তৈরির কারখানা কোথায় রয়েছে, সেখানে কী কী কাজ চলছে তারও আভাস দিতে পারে এখনকার গুপ্তচর বেলুনের প্রযুক্তি। এর সঙ্গে দিকনির্দেশক যন্ত্র লাগানো থাকে যার সাহায্যে বেলুন কোথায় ভেসে যাবে, কত উঁচুতে উড়বে, কোথায় নামবে–সবই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
ইউক্রেনের দাবি, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কতটা তা খতিয়ে দেখতেই বেলুন উড়িয়েছে রুশ সেনা। মূলত ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে নষ্ট করারই পরিকল্পনা করেছে রাশিয়া।