8.5 C
New York
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

রাবিতে শিক্ষককে হুমকির অভিযোগ, উদ্দেশ্য প্রণোদিত: দাবি শিক্ষার্থীর

রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ঊর্দূ বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী পাল্টা হুমকির অভিযোগ করেছেন। শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ এনে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. রশিদুল আলম। তবে ডায়েরীতে উল্লেখ করা সকল অভিযোগ উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। একই ঘটনায় বিকেল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট প্রাঙ্গণে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন সেই শিক্ষার্থী।

ডায়েরিতে উল্লেখ করা শিক্ষার্থীর নাম আহম্মেদ মুন্সী। তিনি উর্দূ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী। এর আগে, তার বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ এনে সেই শিক্ষক গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি মতিহার থানায় একটি জিডি করেন।

অধ্যাপক রশিদুল আলম ডায়েরিতে উল্লেখ করেন, গত ২৪ জানুয়ারি তিনি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস নিচ্ছিলেন। ক্লাস চলাকালীন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আহম্মেদ মুন্সী তাঁর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে দরজায় লাথি মেরে বের হয়ে যান। পরে বিভাগের সভাপতি আতাউর রহমানের সঙ্গে সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী একাডেমিক ভবনের চারতলা থেকে নামার সময় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি প্রদান করে।

ডায়েরিতে তিনি আরো উল্লেখ করেন, এ সময় অভিযুক্ত আহম্মেদ মুন্সী ওই শিক্ষককে ‘দলবাজি করেন, না? আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে যাক, দেখা হবে। জীবন নিয়ে পালানোর সময় পাবেন না’ বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে পালিয়ে যান।

তবে এই অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সম্পূর্ণ অসত্য, সাজানো ও ভিত্তিহীন দাবী করে সংবাদ সম্মেলনে মুন্সী বলেন, স্যার ক্রোধের বশবর্তী হয়ে আমার বিরুদ্ধে জিডি করেছেন। সাধারণ ডায়েরিতে তিনি আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই।

হুমকির অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, অধ্যাপক ড. মো. রশিদুল আলম আমার শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক। তাঁর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা বা তাকে হুমকি দেয়ার প্রশ্নই আসে না। আমি যে স্যারের সাথে অসৌজন্যমূলক আচারণ করিনি তা ক্লাসে উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষার্থীরা বলতে পারবেন। এটা যে আমার স্বভাব সুলভ আচরণ না, তা বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকরাও জানেন। ক্লাসের শুরুতেই ড. মো. রশিদুল আলম স্যার আমাকে নের করে নিলে ক্লাস শেষ হওয়ার পূর্বেই আমি সিরাজী তখন ত্যাগ করি। সিঁড়িতে হুমকি তো দূরের কথা সেদিন ক্লাস শেষে নো রশিদুল আলম ও বিভাগীয় সভাপতি প্রফেসর ড. মো. আতাউর রাহমান স্যারের সাথে আমার দেখাই হয়নি।

ডায়েরি করার সময়সীমাকে অপ্রাসঙ্গিক দাবি করে তিনি বলেন, আমি যদি স্যারকে ২৮.০১.২০২৩ তারিখে হুমকি দিতাম তাহলে তিনি সে সময় সাধারণ ডায়েরী করতেন। অথচ ২০ দিন পর ১৩.০২.২০২৩ তারিখে আমি ক্লাস করার অনুমতি চেয়ে সাভাপতি বরাবর আবেদন করলে তিনি আমার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী করেছেন। তাতে সহজেই প্রমাণিত হয় যে, তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার। বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী এবং বিভাগীয় সভাপতি ও আপনার বরাবর আবেদন করেছেন।

শিক্ষা জীবন নিয়ে শঙ্কা এবং ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আমি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে বিভাগীয় সভাপতি প্রফেসর ড. মো. আতাউর রাহমান স্যার ফলাফল সংশোধনের জন্য আমাকে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে বলেন। তাঁর কথায় আন্দোলনে অ করায় তিনি আমার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী ও আবেদন করতে ড. মো. রশিদুল আলম স্যারকে প্ররোচিত করেছেন বলে আমি মনে করি। এঘটনায় আমি শিক্ষা জীবন নিয়ে শঙ্কা এবং ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উর্দূ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ৩৫ জন নিয়মিত ও তিনজন অনিয়মিত শিক্ষার্থী রয়েছেন। তারা প্রত্যেকেই প্রথম সেমিস্টারে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। তাদের দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা গত ১২ এপ্রিল শুরু হয়ে শেষ হয় ২১ এপ্রিল। গত ২৫ আগস্ট ফল প্রকাশিত হয়। এতে ৩৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩০ জনের ফল প্রকাশিত হয়। ৬ জন নিয়মিত ও দুজন অনিয়মিত শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশিত হয়নি এবং ছয়জন শিক্ষার্থী একটি করে কোর্সে ফেল করেছেন। আহমেদ মুন্সী ফেল করা শিক্ষার্থীদের একজন।

অভিযোগের বিষয়ে আহম্মেদ মুন্সী বলেন, আমাদের ২০১৯-২০ সেশনের দ্বিতীয় সেমিস্টারের রেজাল্ট নিয়ে তদন্ত চলমান আছে। রেজাল্ট অনুযায়ী আমি ফেল করেছি। সে হিসেবে এখন পরীক্ষা দিলে ২০২০-২১ সেশনের সঙ্গে দিতে হবে। ওদের নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে। কিন্তু আমাদের ওই ঘটনার এখনো কোনো সমাধান হয়নি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেও যদি আমাদেরকে ফেল দেখানো হয়, তাহলে পরীক্ষা দিতে হলে আমাকে ক্লাস করতে হবে। তাই আমি ওইদিন ক্লাসে যাই। কিন্তু আমি ক্লাসে গেলে স্যার বলেন, ‘১৯-২০ সেশনের কেউ থাকলে ক্লাস থেকে বের হয়ে যাও। তোমাদের ক্লাস নিতে পারবো না। তদন্ত কমিটির অনুমতি নিয়ে আসো তোমরা। আমি কোনো ঝামেলায় যেতে চাই না।’ পরে আমি অনুমতির জন্য দরখাস্ত করেছি। কিন্তু পরে শুনেছি তিনি আমার নামে জিডি করেছেন।

তদন্ত কমিটির অনুমতি নিয়ে আসার বিষয়ে অভিযোগকারী শিক্ষক রশিদুল আলম বলেন, ‘সে যখন ক্লাসে আসে তখন আমি বলেছি, তোমাদের ক্লাস করতে হলে তদন্ত কমিটির অনুমতি লাগবে। কারণ বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।’

ক্লাস করতে অনুমতি প্রয়োজন কিনা? এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাজ ফল পুনর্মূল্যায়ন করা। যারা অকৃতকার্য হয়েছে, তাদের পরবর্তী বর্ষের সাথে ক্লাস করতে কোনো বাধা নেই।’

এ বিষয়ে বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ওইদিনের ঘটনার পর ক্লাস করার অনুমতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কলা অনুষদের ডিন ও বিভাগের সভাপতি বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন আহম্মেদ মুন্সী। সেখানে তিনি অভিযোগকারী শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে তাকে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পর তিনি ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
আজকের রাজশাহী
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

বিনোদন

- Advertisment -spot_img

বিশেষ প্রতিবেদন

Discover more from News Rajshahi 24

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading