
আপেল মাহমুদ রাঙ্গা বাগমারা প্রতিনিধিঃ
বর্তমান সরকারের আমলে বাগমারা আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের প্রচেষ্টায় উপজেলায় কৃষি খাতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কৃষকদের মাঝে সার, বীজ, কীটনাশক সরবরাহের সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বোরো মৌসুমে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পূর্বের মতো বাগমারায় বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের জন্য কৃষকদের ফসল হানি হয় না। শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার জন্য কৃষকরা ক্ষেতে পানি সেচ দিতে পারতেন না। পানির অভাবে ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হতো। এ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এসময়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) মাধ্যমে বাগমারায় ৪৩৫ টি গভীর নলকূপ স্থাপন এবং ২২ কিলোমিটার খাল খনন করা হয়েছে। সেই সাথে নতুন করে বারনই ও ফকিন্নী নদীর ৩০ কিলোমিটার পুনঃখনন করা হচ্ছে। এরফলে সারা বছর নদীতে পানি পাওয়া যাবে এবং সেই পানি দিয়ে সারা বছর ফসল ফলাতে পারবে হাজার হাজার কৃষক।
এছাড়া ব্যক্তি মালিকায় রয়েছে বেশকিছু গভীর ও অগভীর নলকূপ। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের জন্য উপজেলায় ৭৩ হাজার ৬২০ জন কৃষককে ৯১ কোটি ৭ লাখ ১৫ হাজার টাকার কৃষি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সঠিকভাবে ফসল উৎপাদনের জন্য ২০ হাজারের অধিক কৃষককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে কৃষি অফিসের মাধ্যমে। এ সময়ে উপজেলার ১ লাখ ২১ হাজার ৯২২ জন কৃষক মাত্র ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলে লেনদেন করতে পারছেন।
বর্তমান সরকারের সময়ে আধুনিক প্রযুক্তিতে চাষাবাদের জন্য ভূর্তকী মূল্যে ১৪টি কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার কৃষকদের মাঝে কৃষি যন্ত্রপাতি এবং উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। এতে করে কৃষিতে ঘটেছে বিরাট সাফল্য ।
বিগত চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে কোন প্রণোদনা পাইনি কৃষকরা। সঠিক ভাবে সার, কীটনাশক এবং বীজ পাওয়ায় কৃষিতে ঘটেছে আমূল পরিবর্তণ। এখন সারের পিছনে আর কৃষকদের ছুটতে হয় না, ডিলারের মাধ্যমে সার ছুটে এখন কৃষকদের কাছে। ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপির নিয়োমিত সার ডিলার এবং কৃষি বিভাগে মনিটরিং ফলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ।
এছাড়াও উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার কৃষিকে কৃষকদের দোড়গোড়ায় নিয়ে যেতে চালু করা হয়েছে নানা পরামর্শ ও সেবা প্রদান কেন্দ্র। এতে কাজ করে চলেছেন উপজেলা কৃষি অফিসার, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার সহ ৪৯ জন উপ-সহকারী কর্মকর্তা। কৃষকরা যেন অতি সহজে তাদের সমস্যা অনুযায়ী সঠিক সেবা পায় সে জন্য বিভিন্ন মোবাইল এ্যাপস্ এর ব্যবহার চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ঘরে বসেই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারছেন কৃষকরা। যেমন কৃষি বাতায়ন, কৃষকের জানালা প্রভৃতি। বর্তমানে ১৬১২৩ নম্বরে ফোন করেও সেবা নিতে পারছেন কৃষকরা।
বিশেষ করে বাগমারায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে উপজেলা জুড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে সব্জির চাষ। কৃষি নির্ভর এলাকা হিসেবে এখন অনেকটাই পরিচিতি লাভ করেছে বাগমারা। এখানে প্রায় সারা বছর ধরে বিভিন্ন প্রকার শাক সব্জি উৎপাদন করে থাকেন কৃষকরা। কৃষকের উৎপাদিত শাক সব্জি এখন জমি থেকেই পাইকারী বিক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে। আবার অনেকেই তাদের শাক সব্জি রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রয় করতে পারছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বাগমারা কৃষি নির্ভর এলাকা। এখানকার প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। কৃষকদের সঠিক ভাবে ফসল উৎপাদন করতে সাংসদ এনামুল হকের প্রচেষ্টায় সরকারী ভাবে বিভিন্ন বরাদ্দ নিয়ে তা কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার। বর্তমান সরকার কৃষি এবং কৃষকের জন্য কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপি বলেন, বাগমারা মূলত কৃষি নির্ভর উপজেলা। এ উপজেলার কৃষির উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা হচ্ছে অনেক পণ্য। বিএনপির আমলে সারের জন্য কৃষককে জীবন দিতে হয়েছে। সেই সাথে জমির দলিল জমা দিয়ে সার নিতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে কোন কৃষককে সারের জন্য জীবন দিতে হয় না।