11.9 C
New York
বুধবার, মে ১, ২০২৪
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

অবশেষে রাসিক থেকে আলোচিত পিএ টিটুর বিদায়

মেহেদী হাসান, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নানান বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু। রয়েছে কিশোর গ্যাংকে মদদ দেওয়ার অভিযোগ। তার প্রশ্রয় আর মদদে শান্তির নগরী রাজশাহীতে গড়ে উঠেছে কয়েকটি সন্ত্রাসীবাহিনী। এসব বাহিনীর হাতে জিম্মি নগরবাসী।

 

ঘটনায় ডিসেম্বর যুগান্তরের প্রথম পৃষ্ঠায়তরিক বাহিনীর সন্ত্রাসী তাণ্ডবে অশান্ত রাজশাহী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা টিটুরমদদে বেপরোয়া বাহিনীর সদস্যরাশিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরই শুরু হয় তোলপাড়।

এমনকি আওয়ামী লীগ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও টিটুর অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। টিটু নানান বিতর্কিতকর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায় মেয়র লিটনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ তুলে আসছিলেন।

এদিকে যুগান্তরে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই রাজশাহী সিটি করপোরেশন(রাসিক) কর্তৃপক্ষ টিটুর ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর ব্যক্তিগত সহকারীর (পিএ) দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

টিটুর কোনো নিয়োগপত্র না থাকায় তাকে মৌখিকভাবে অব্যাহতি দেন তিনি। টিটুকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টিসিটি মেয়র লিটন নিজেই নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে রাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন মেয়রনির্বাচিত হন। এরপর টিটুকে পিএর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের জুনে আওয়ামী লীগ নেতা লিটন আবারো মেয়র পদেনির্বাচিত হলে টিটুকে একই দায়িত্ব দেওয়া হয়।

প্রথম দফায় পিএর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই মেয়র লিটনের নাম ভাঙিয়ে এবং ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে টিটু নানান অপকর্মেজড়িয়ে পড়েন। বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। তার আশ্রয় এবং মদদে নগরীর পাড়ামহল্লা এবং ওয়ার্ডে ওয়ার্ডেও গড়ে ওঠে কিশোরগ্যাং সন্ত্রাসী বাহিনী। রাজশাহীর আলোচিত সন্ত্রাসী গ্রুপতরিক বাহিনী  নেপথ্যে মদদদাতা হিসেবেও পরিচিত টিটু।

এই বাহিনী বোমাবাজি, মাদক কারবার, বালুমহাল দখল, ফুটপাতে নির্মাণাধীন ভবনে চাঁদাবাজি এবং অস্ত্র কেনাবেচাসহ সবধরনের অপরাধেই জড়িত। মোটরসাইকেল চুরি ছিনতাইয়ের মূলহোতাও তরিক বাহিনী।

বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে থেকে ১৫টি করে মামলা রয়েছে। কেবল তরিকের বিরুদ্ধেই ১৫টি মামলা চলমান। তরিকবাহিনীর অস্ত্রের মহড়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এতেআতঙ্কিত নগরবাসী।

অভিযোগ রয়েছে, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটুর রাজনৈতিক আশ্রয়প্রশ্রয়েইবেপরোয়া তরিক বাহিনী। বাহিনীর হামলায় অধিকাংশ নির্যাতিতদের মামলা করতে দেননি টিটু। নিজেকে মেয়র লিটনেরএকান্ত ঘনিষ্ঠপরিচয় দিয়ে ভয় দেখিয়ে আপস করতে বাধ্য করতেন টিটু।

অপরদিকে ২০১৭ সালে জুনিয়র সেকশন অফিসার হিসেবে রাজশাহী প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) যোগদান করেনআব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু। নিয়োগের পর কিছুদিন অনিয়মিত অফিস করলেও ২০১৮ সালের জুনের পর আর একদিনও রুয়েটেতার কর্মস্থলে যাননি। তবে গত পাঁচ বছর তিনি রুয়েট থেকে নিয়মিত বেতনভাতাসহ সব আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন।পেয়েছেন ইনক্রিমেন্টও। এই পাঁচ বছর ধরে টিটু মেয়র লিটনের পিএ হিসেবে কাজ করছেন। নগর ভবনে নিয়মিত অফিস করেএখানেও তিনি ভোগ করেছেন সরকারি সুযোগসুবিধা।

রুয়েটে নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম যোগদানের পর বিষয়টি তার গোচরে আসে। ফলে রুয়েটের রেজিস্ট্রার সেপ্টেম্বর টিটুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। তাকে দীর্ঘ অনুপস্থিতির বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।যদিও টিটুর দাবি, তিনি সিটি মেয়রের সুপারিশে ডেপুটেশন বা প্রেষণে কাজ করেছেন; কিন্তু প্রেষণ বা ছুটিসংক্রান্ত কোনো নথিপত্ররুয়েটে খুঁজে পাওয়া যায়নি। নগর ভবনেও সংক্রান্ত কোনো দাপ্তরিক নথিপত্র নেই। গত পাঁচ বছরে রুয়েট থেকে নেওয়া বেতনভাতার টাকা তাকে ফেরতে দেয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু বলেন, আমাকে মেয়রপিএর পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি জানি না। তবে আমাকে এক মাস ছুটি দেওয়া হয়েছে। তাকে অব্যাহতি দেওয়ারবিষয়টি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

টিটুকে পিএর পদ থেকে অব্যাহতির বিষয়ে রাসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান মিশু বলেন, টিটু দাফতরিকভাবেনিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন না। তিনি মৌখিকভাবে মেয়রের পিএ পদে দায়িত্ব পালন করতেন। তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়াহয়েছে কিনাসেই বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানাননি।

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
আজকের রাজশাহী
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

বিনোদন

- Advertisment -spot_img

বিশেষ প্রতিবেদন

error: Content is protected !!

Discover more from News Rajshahi 24

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading