21.4 C
New York
বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

ওষুধ ছাড়াই টাইপ-টু ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাবেন যেভাবে

ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র একটি হরমোনসংশ্লিষ্ট রোগ। ডায়াবেটিস দুই ধরনের হতে পারে- টাইপ-এক বা ইনস্যুলিন নির্ভরশীল এবং টাইপ-টু বা ইনস্যুলিন নিরপেক্ষ ডায়াবেটিস। ওষুধ গ্রহণ ছাড়াই টাইপ-টু ডায়াবেটিস থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে সম্প্রতি সেল মেটাবলিজম জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় জানানো হয়।

যুক্তরাজ্যের নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রয় টেইলরের নেতৃত্বে কয়েক বছর আগে প্রকাশিত ডায়াবেটিস রেমিশন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা যায়, কোনো ওষুধ গ্রহণ ছাড়াই নিবিড়ভাবে ওজন হ্রাসের মাধ্যমে টাইপ-টু ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

উপশমটি কীভাবে ঘটে, এটার স্থায়িত্ব, একজন অন্যজন থেকে কেন স্থায়ী উপশম লাভ করে, এ রোগ ফিরে আসে কিনা? ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ডাটা, কাটিং-এজ ইমেজিং এবং রক্ত পর্যবেক্ষণ কৌশল ব্যবহার করে অধ্যাপক টেইলর প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা শুরু করেন।

এ গবেষণার লক্ষ্য ছিল এক দশকেরও বেশি সময় আগে প্রকাশ হওয়া অধ্যাপক টেইলর ও তার দলের ‘টুইন সাইকেল হাইপোথিসিস’ নতুন করে পরীক্ষার মাধ্যমে পুনরায় নিশ্চিত হওয়া। গবেষণাটি প্রস্তাব করেছিল, লিভারে ফ্যাট জমা হওয়ার ফল হলো টাইপ-টু ডায়াবেটিস, যা ইনসুলিন প্রতিরোধ করে এবং রক্তে শর্করার উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়।

লিভারের চর্বিগুলোর এ বর্ধিত স্তরের কারণে লিপিডগুলো অগ্ন্যাশয়সহ বেশ কয়েকটি টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়ে। ইনসুলিন তৈরি করা বিটা কোষগুলোর অবস্থান এ অগ্ন্যাশয়েই। এ কারণে স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডগুলোর দীর্ঘমেয়াদি প্রকাশ বিটা কোষগুলোর জন্য ক্ষতিকর। গবেষকরা টাইপ-টু ডায়াবেটিসের পুনরাবৃত্তির মূল প্যাথফিজিওলজিক প্রক্রিয়াগুলো বর্ণনা করতে চেয়েছিলেন, যা প্রাথমিকভাবে উপশম বা নিরাময় হলেও সেটা আবার ফিরে এসেছিল।

এর কারণ উদ্ধারে গবেষকরা ১২-১৪ মাস এমআরআই স্ক্যান ব্যবহার করে অন্তঃকোষ এবং পেটের ফ্যাটকে পরিমাপ করেছেন। বিশেষভাবে তারা অগ্ন্যাশয় ও লিভারের চর্বি পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। বিশ্লেষণে গ্লুকোজ, এইচবিএ১সি, উচ্চ ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (এইচডিএল) কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাপ অন্তর্ভুক্ত ছিল। দলটি ফ্যাটি অ্যাসিড, ইনসুলিন নিঃসরণ এবং বিটা-সেল ফাংশনও বিশ্লেষণ করেছিল।

সমীক্ষায় উঠে এসেছে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সিংহভাগ মানুষেরই দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ডায়াবেটিস ছিল না, তবে এটি কেবল লিভার ও অন্ত্রে ফ্যাট কম থাকায়ই সম্ভব হয়েছিল। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যারা ১৫ কেজি বা তার বেশি ওজন কমাতে সক্ষম হয়েছিলেন, তাদের ১০ জনের মধ্যে নয়জনই এ ফল পেয়েছেন।

এর দুই বছর পর অংশগ্রহণকারীদের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসমুক্ত ছিল। অথচ ডায়াবেটিসের ওষুধ গ্রহণে টানা ২৪ মাস সময় প্রয়োজন হয়। তবে এর বাইরে যাদের ডায়াবেটিস ফিরে এসেছিল, তাদের উচ্চ লিভার ট্রাইগ্লিসারাইড এবং উচ্চ ইন্টারপ্যানক্রিয়াটিক ফ্যাট স্তর ছিল।

গবেষক রয় টেইলর বলেন, গবেষণার এ ফলের অর্থ হলো, আমরা এখন টাইপ-টু ডায়াবেটিসের সহজ সূত্র দেখতে পাচ্ছি, যেখানে ব্যক্তির নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি চর্বি জমছে। এক্ষেত্রে ডায়েট ও সেটা ধরে রাখার মাধ্যমে রোগীরা চর্বি কমাতে সক্ষম হচ্ছে এবং তাদের ডায়াবেটিসকে চিরতরে বিদায় জানাতে পারছে। যত দ্রুত এ ফ্যাট কমানো যাবে, ক্ষতির আশঙ্কা ততই কমে আসবে।

উল্লেখ্য, টাইপ-টু ডায়াবেটিস রোগের পেছনে থাকে মূলত ‘ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স’। বিশ্বজুড়ে ২৪৬ মিলিয়ন ডায়াবেটিস রোগীর ৯০ শতাংশের বেশি হলো টাইপ-টু ডায়াবেটিস।

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
আজকের রাজশাহী
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

বিনোদন

- Advertisment -spot_img

বিশেষ প্রতিবেদন

error: Content is protected !!

Discover more from News Rajshahi 24

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading