18.9 C
New York
বুধবার, মে ৮, ২০২৪
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

টাইপ-১ ডায়াবেটিস : লক্ষন ও প্রতিকার

অগ্নাশয় থেকে যখন ইনসুলিন নির্গত বা নিঃসৃত হয় না , হলেও সামান্য পরিমানে নির্গত হয় যা শরীরের চাহিদা পূরন অক্ষম তাকে টাইপ-১ ডায়াবেটিস বলা হয়ে থাকে। সাধারনত জেনেটিক কারনে এই ধরনের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে বয়স্ক যারা টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয় তাদের অধিকাংশ কোন এক সময়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে ভুগে আসছে। সঠিক পরিচর্চা এবং লাইফস্টাইল ব্যবস্থাপনা না করার কারনে কোন এক সময়ে টাইপ-২ থেকে টাইপ-১ ডায়াবেটিস হয়ে যায়।

টাইপ-১ ডায়াবেটিস পরিচর্চা এবং ব্যবস্থাপনার প্রধান কাজ হল জীবনধারা পরিবর্তন, বাইরে থেকে ইন্সুলিন প্রদান করা। এই টাইপের ডায়াবেটিসে ঘনঘন রক্তে সুগারের মাত্রা পরীক্ষা করা হয়। বাইরে থেকে ইনসুলিন দেয়ার কারনে রক্তে সুগারের মাত্রা অস্বাভাবিক হারে হ্রাস পেতে পারে। অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষ ডিস-ফাংশনের কারনে কোন প্রকার বা অল্প পরিমান ইনসুলিন নির্গত হয়।

টাইপ-১ ডায়াবেটিস লক্ষণ

যে সকল কারন লক্ষ করলে বুঝবেন আপনার টাইপ-১ ডায়াবেটিস হয়েছে।। নিচের লক্ষনগুলোকে টাইপ-১ ডায়াবেটিস এর সাধারন লক্ষন বলা হয়ে থাকে। এই ধরনের লক্ষন দেখা দিলে বুঝতে হবে টাইপ-১ ডায়াবেটিস আক্রান্ত হয়েছেন।

  • অস্বাভাবিক তৃষ্ণা পাবে
  • মুখ শুকিয়ে যাবে
  • ওজন হারাতে থাকবেন
  • ঘনঘন মূত্রের চাপ দিবে
  • ক্লান্ত অনুভব করবেন
  • শরীর দুর্বল হয়ে যাবে।
  • চোখে ছানি পড়বে
  • ক্ষত স্থান কোনভাবেই পূরন হবে।
  • অবিরাম ক্ষুধা
এই সকল কারন ছাড়াও টাইপ-১ ডায়াবেটিস নির্ণয় করা অনেক কঠিন। তাই এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে বিভিন্ন পরীক্ষা করতে হবে।

টাইপ-১ ডায়াবেটিস চিকিৎসা ও প্রতিকার

টাইপ-২ ডায়াবেটিস চিকিৎসা করে প্রতিকার করা সম্ভব নয়। এটাকে প্রতিরোধ করে নিয়ন্ত্রন করা যায়। তাই এই ধরনের ডায়াবেটিসে নিয়মিত সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রন, চিকিৎসা ও ইনসুলিন সেবা নিয়ে টাইপ-১ ডায়াবেটিস রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে শরীরে শক্তি প্রবাহিত করা হয়। জীবনধারা বা লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে হবে।

ইনসুলিন
টাইপ-১ ডায়াবেটিস এর প্রধান চিকিৎসা হল ইনসুলিন গ্রহন করা। ইনসুলিন গ্রহনের মাধ্যমে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব। বিভিন্ন ধরনের ইনসুলিন রয়েছে, এটা গ্রহনের নির্ভর করে কত তাড়াতাড়ি কাজ করে। ইনসুলিন গ্রহন করা একটা সিরিঞ্জের মাধ্যমে, পেন ইনসুলিনের মাধ্যমে অথবা পাম্প ইনসুলিনের মাধ্যমে। বিভিন্ন প্রকারের ইনসুলিন এর কার্যকারিতা বিভিন্ন ধরনের। নিচে ইনসুলিনের প্রকারগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হল।

ইনসুলিনের প্রকার
ইনসুলের কাজের এর উপর নির্ভর করবে কিভাবে গ্রহন করতে হবে। কিছু ইনসুলিন আছে যেগুলো দ্রুত কাজ করে, কিছু দেরিতে করে, কিছু ইন্টারমিডিয়েট, তাই ইনসুলিন গ্রহনের পূর্বে কোনটা কোন প্রকৃতির সেই বিষয়ে জানতে হবে।

র‌্যাপিড এক্টিং ইনসুলিন
এই টাইপের ইনসুলিন খাবার আগে অথবা খবারের সাথে গ্রহন করতে হয়। ইনসুলিন গ্রহনের সাথে সাথে রক্তে সুগারের মাত্রা হ্রাস পেতে থাকে। তাই এই ধরনের ইনসুলিন গ্রহনের সময় ঘনঘন রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করা। র্যাপিড এক্টিং ইনসুলের মধ্যে যেগুলো বাজারে পাওয়া যায় সেগুলো হল- Asparat, Glulisine, Lispro ইত্যাদি টাইপের ইনসুলিন।

শর্ট এক্টিং ইনসুলিন
এই ধরনের ইনসুলিন খাবার আগে সিরিঞ্জের মাধ্যমে গ্রহন করা হয়। এটা র্যা পিড এক্টিং ইনসুলিনের চেয়ে কম কার্যকারি এবং ধীরে ধীরে রক্তের সুগারের মাত্রা হ্রাস করে থাকে। এই ধরনের ইনসুলিন সবার ক্ষেত্রে প্রয়োজ্য নয়। সে সকল ইনসুলিন শর্ট একটিং হিসাবে কাজ করে তার মধ্যে অন্যতম Actrapid, Humulin R, Insuman Rapid ইত্যাদি পাওয়া যায়।

ইন্টারমিডিয়েট ইনসুলিন এক্টিং
এই ধরনের ইনসুলিন শর্ট এক্টিং ও র‌্যাপিড এক্টিং ইনসুলিনের চেয়ে আলাদা একটা ইনসুলিন। এই ইনসুলিনের কার্যকারিতা র্যা পিড এক্টিং থেকে কম কিন্তু শর্ট এক্টিং থেকে বেশি হয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শর্ট এক্টিং ইনসুলিনের সাথে ইন্টারমিডিয়েট ইনসুলিন দেয়া হয়ে থাকে। ইন্টারমিডিয়েট ইনসুলিন ইনজেকশনের ১ ঘন্টার মধ্যে কাজ শুর করে। ইনজেকশনের পর থেকে ৭ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ীত্ব থাকে। Humulin NPH, Protaphane, Insulatard ইত্যাদি বাজারে ইন্টারমিডিয়েট ইনসুলিন।

লং অ্যাক্টিং ইনসুলিন

এই টাইপের ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই ধরনের ইনসুলিন ধীরে ধীরে রিলিস হয়ে থাকে। এই ধরনের ইনসুলিন সকালে অথবা বিকালে গ্রহন করতে হয়। লং অ্যাক্টিং ইনসুলিনের মধ্যে Detemir, Glargine বাজারে পাওয়া যায়।

প্রতিটি ইনসুলিন গ্রহনের সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। বাইরে থেকে ইনসুলিন গ্রহন করলে ঘনঘন গ্লূকোজ মনিটরিং করতে হয়। ঘনঘন মনিটরিং না করলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া দেখা দিতে পারে। এমনকি, অত্যাধিক হারে গ্লূকোজের মাত্রা হ্রাস পেলে মৃত্যু হতে পারে।

টাইপ-১ ডায়াবেটিস সম্পূর্ণরুপে ইনসুলিনের উপর নির্ভরশীল। দিনে অন্তত দিনে চারবার রক্তে সুগারের মাত্রা নির্ণয় করতে হয়।

ডা: রেবেকা সুলতানা

এমবিবিএস, এমডি(প্যাথলজি), সিসিডি(বারডেম)

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
আজকের রাজশাহী
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

বিনোদন

- Advertisment -spot_img

বিশেষ প্রতিবেদন

error: Content is protected !!

Discover more from News Rajshahi 24

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading