30 C
Rajshahi
Tuesday, November 28, 2023
Advertismentspot_img

কাটাখালীতে স্কুল কমিটি গঠন নিয়ে গ্রামবাসীর উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর কাটাখালী থানা এলাকায় স্থানীয় লোকজনের সাথে আলোচনা না করে এবং স্কুল পরিচালনা পরিষদের নির্বাচনী মনোনয়ন না দেয়ায় প্রধান শিক্ষক ও এডহক কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে বেলঘড়িয়া গ্রামবাসী। মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) অভিভাবক সদস্যের মনোনয়ন ফরম জমা শেষ দিনে এ নিয়ে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বেলঘড়িয়া আব্দুস সাত্তার উচ্চ বিদ্যালয়ে এডহক কমিটি বিদ্যমান। কিছুদিন আগে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম কাউকে না জানিয়ে এডহক কমিটি সভাপতি মুক্তার হোসেনকে সভাপতি করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য চারঘাট মাধ্যমিক শিক্ষা পাঠায়। এই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, রিপন আকতার, তোফাজ্জল হোসেন, রবিউল ইসলাম ও পারভীন বেগম। এ ঘটনায় ফুঁসে উঠে অত্র এলাকার সাধারণ জনগণ। তাদের দাবি, নির্বাচন দিয়ে বিধি মোতাবেক কমিটি গঠন করা হোক।

কিন্তু প্রধান শিক্ষক সেটা না করে পেশি শক্তি ব্যবহার করে নিজের ইচ্ছায় পকেট কমিটি গঠন করছেন বলে দাবি গ্রামবাসীর। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে বলেও ধারণা করছেন অনেকে। তবে এলাকাবাসী অভিযোগ দিলে প্রধান শিক্ষকের দেয়া কমিটি বাতিল করে দেয় শিক্ষা অফিস। পাশাপাশি বিধি মোতাবেক কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়। সেই মোতাবেক মঙ্গলবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত শিক্ষক প্রতিনিধি ও অভিভাবক সদস্যের মনোনয়ন উত্তোলন ও দাখিলের শেষ সময় ছিল। মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন আগামী ১০ নভেম্বর ও নির্বাচন ২২ নভেম্বর।

জানা যায়, শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে ওই স্কুলের কম্পিউটার শিক্ষক ও বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতার মেয়ে রিনা পারভীন মনোনয়ন উত্তোলন করেন। কিন্তু তিনি মনোনয়ন ফরমে প্রস্তাবকারী পেলেও সনাক্তকারি পাননি। কারণ হিসেবে তিনি জানান, প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি মুক্তার হোসেন অন্যান্য শিক্ষকদের পেশিশক্তি দেখিয়ে বেতন-ভাতা বন্ধের হুমকী দেয়। এতে তার সহকর্মী শিক্ষকরা তার পক্ষে সনাক্তকারি হতে ভয় পাচ্ছে। এমনকি তার প্রস্তাবকারি হওয়ায় কাব্য তীর্থ শিক্ষককে গালি-গালাজসহ চাকরি কেড়ে নেওয়া হুমকী দেয়। মঙ্গলবার দুপুরে ওই শিক্ষিকাসহ অভিভাবক সদস্যের মনোনয়ন প্রত্যাশি অনেকে মনোনয়নপত্র নিতে গেলে অফিসের মধ্যে একে-অপরের প্রতি কথাকাটা শুরু হয়। এতে অবৈধ গোপন কমিটির রিপন আকতার ও বর্তমান সভাপতি মুক্তার হোসেন মনোনয়ন প্রত্যাশিদের অকথ্যভাষায় গালি-গালাজ ও দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষকদের মধ্যে অনেকে বলেন, একরকম চাপ প্রয়োগ করেই প্রধান শিক্ষক ও এডহক কমিটির সভাপতি মুক্তার হোসেন মনোনীত শিক্ষক প্রতিনিধি হবে মর্মে স্বাক্ষর নেয়। অনেকে মান সম্মান খুয়ানো ও গন্ডগোল এড়ানোর জন্য স্বাক্ষর করেন। এলাকাবাসির অনেকে জানান, ৩ নভেম্বর থেকে ৮ নভেম্বর মনোনয়ন উত্তোলন জমা দানের শেষ সময় থাকলেও প্রধান শিক্ষক চারদিন অনুপস্থিত থাকেন। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক ও এডহক কমিটির সভাপতি মুক্তার হোসেন কাছের লোকদের মনোনয়ন উত্তোলনের সুযোগ দেয়া হয় বলে তারা অভিযোগ করে।

এব্যাপারে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম গোপন কমিটির অনুমোদনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এবারে বিধিবিধান মতই কমিটি গঠন হচ্ছে। বাধা দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা। নইলে ১১টি মনোনয়ন উত্তোলন ও জমা হতো না। সঠিক সময়ে নিয়মে ও নির্ধারিত দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এডহক কমিটির সভাপতি মুক্তার হোসেন বলেন, ‘আমার মরহুম আব্দুস সাত্তার এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। আমি নিজেও এই বিদ্যালয়ের উন্নয়নে জমি দান করেছি। এলাকার জনগণ ও অভিভাবক সদস্যরাই আমাকে সভাপতি করেছে। নির্বাচনে অনেকে হেরে যাওয়ার ভয়ে মনোনয়ন উত্তোলন না করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে’।

অফিসের মধ্যে হট্টোগোলের বিষয়ে তিনি বলেন, এলাকার সকল মানুষ একমত হবে-এমনটি আশা যায় না। তাই পক্ষে-বিপক্ষে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে। পরে সবায় শান্ত হয়েই অফিসকক্ষ ত্যাগ করেছেন।

রাজশাহী বিভাগ

Leave a Reply

সর্বশেষ খবর

- Advertisment -spot_img

সর্বাধিক জনপ্রিয়