
রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী হলো মাদকের রাজধানী। এই উপজেলার মাদকের গডফাদার শীষ মোহাম্মদ, ভোদলরা প্রশাসনের ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থেকেই চালিয়ে যাচ্ছে তাদের নিত্য দিনের কর্মকান্ড মাদকের কারবার। গোদাগাড়ীর তালিকাভুক্ত ১৯৮ জন মাদক ব্যবসায়ী বীর দাপটে চলাচল করলেও রহস্যজনক কারণে প্রশাসন রয়েছে নীরব! এই সংখ্যায় শীষ মোহাম্মদ আর শহিদুল ইসলাম ভোদলকে নিয়ে থাকছে কিছু কথা।
গোদাগাড়ীর কুখ্যাত মাদকের গডফাদার বিশেষ করে হেরোইনের গড ফাদার শীষ মোহাম্মদ। তিনি বর্তমানে রাজশাহীতে বিলাস বহুল বাড়ি আর চেম্বার নিয়ে আয়েশি জীবন-যাপন করছেন। সেই সাথে গোদাগাড়ীর মাদকের চালান পরিচালনা করছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে (৫ অক্টোবর ২০১৯) এই শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী শীষ মোহাম্মদকে ৬ রাউন্ড গুলিভর্তি একটি বিদেশী পিস্তল, দুইটি গুলিভর্তি ম্যাগজিন, ৫০০ গ্রাম হেরোইন ও ১৫০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেই মাদক ও অস্ত্র ব্যবসার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেন পুলিশের কাছে। তার বিরুদ্ধে রাজশাহীর বিভিন্ন থানায় ৬টি মাদকের মামলা রয়েছে।
সূত্রটি বলছে, মূলত সেই আটকের পর থেকেই প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাজশাহীতে বসবাস শুরু করে মাদকের গডফাদার শীষ মোহাম্মদ। বর্তমানে রাজশাহীতে বসেই গোদাগাড়ীর মাদক সিন্ডিকেট পরিচালনা করছেন তিনি। যেহেতু তিনি মাদক (হেরোইন) নিজ হাতে ধরেন না। তাই কর্মচারী ও লেবারই মাদক আনা নেওয়ার কাজ করে থাকে। তার কোন লোক গ্রেফতার হলে তাদের ছাড়াতে অর্থের যোগান ও তদবির করে শীষ মোহাম্মদ।
এছাড়াও গোদাগাড়ীর কুখ্যাত মাদকের গডফাদার শহিদুল ইসলাম ভোদল সে, গোদাগাড়ী থানার মহিশালবাড়ি এলকার আফসার আলী ডাকুর ছেলে।
শহিদুল ইসলাম ভোদলের বিরুদ্ধে গোদাগাড়ী মডেল থানা, পবা থানা ও নঁওগা জেলার মহাদেবপুর থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। সে গোদাগাড়ী থানা পুলিশ সহ সকল গোয়েন্দা সংস্থার তালিকা ভুক্ত মাদক সম্রাট।
জানা যায়, শহিদুল ইসলাম ভোদল সিদ্ধ ডিম বিক্রয়ের মধ্য দিয়ে কর্ম জীবন শুরু করেন। পরে মহিশালবাড়ি গরুর হাটে কোরিডোরের জাল কাগজ বিক্রি করত। এরপর হেরোইন ইয়াবা, ভারতীয় মদ বিক্রি করে ১০ বছরের ব্যবধানে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। সে প্রতিবেশী মৃত. শাহাজান, মেরাজুল, বাইদুল, সাইদুলদের বসত ভিটা জোরপূর্বক দখল করে নিজের ৩ তলা ভবন এরশাদ সিকদার খ্যাত স্বর্ণ কমল তৈরী করেছেন। রাজশাহী শহরে রয়েছে দুইটি বাড়ী, আবাদি জমি ১০০ বিঘা, ব্যবহার করেন দুইটি প্রাইভেটকার। বর্তমানে বিশাল অর্থবিত্তের মালিক এই সাবেক সিদ্ধ ডিম বিক্রেতা ভোদল। সে হুন্ডি ব্যবসার সাথেও জড়িত বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এছাড়াও শহিদুল ইসলাম ভোদলের শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তারাও বিশাল অর্থবিত্তের মালিক।
শহিদুলের ভাতিজা আলামিন সেও মাদকের গডফাদার। তার মা লোকের বাড়ী থেকে ধান নিয়ে এসে চাউল করে কোন রকম সংসার চালাত। সেই আলামিন তার চাচা শহিদুল ইসলাম ভোদলের সাথে মাদকের ব্যবসা করে রুপকথার গল্পকে হার মনিয়ে হয়েছেন নব্য কোটিপতি। রাজকীয় বাড়ী, পিয়ারা বাগান, ৩০ বিঘা ধানী জমি, শহরে প্লটসহ অবৈধভাবে কোটি কোটি কালো টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছেন।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইফতেখায়ের আলম বলেন, মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা রয়েছে। সকল মাদক কারবারিদের উপর পুলিশের নজরদারি রয়েছে। অনেকেই নিজ গ্রাম থেকে পালিয়ে আছে।
তিনি আরও বলেন, মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে পর্যায়ক্রমে সকল মাদক কারবারিদের গ্রেফতার করা হবে।