
নিউজ রাজশাহী ডেস্কঃ গোদাগাড়ী উপজেলা থেকে কেজি, কেজি হেরোইন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাচারকারী গোদাগাড়ীর শীষ মোহাম্মদ শিকড় পুতেছে রাজশাহী মহানগরীতে।
কোটি কোটি টাকার মাদকের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করে এই মাদক মাফিয়া শীষ মোহাম্মদ। একধিক মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামী তিনি। রাজশাহী মহানগরীতে রয়েছে একাধিক বাড়ি। সিটি ভবনের পাশে সানডায়াল কোচিং সেন্টারের গলির নিজ ভবনে রয়েছে সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রিত আলিশান বাড়ি ও চেম্বার। তবে পরিবার নিয়ে থাকেন উপ-শহরে। চেম্বারে বসে মদ পান করা আর কোটি কোটি টাকার হেরোইনের চালান নিয়ন্ত্রণ করাই তার শীষ মোহাম্মদের কারবার বলে এশাধিক সূত্রে জানা গেছে।
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, তিনি কয়েকটি মোবাইল ব্যবহার করেন। আর কথা বলার সময় বিভিন্ন কোর্ড ব্যবহার করেন। তার খুব কাছে থেকেও তার কথা কেউ বুঝতে পারবে না। সমমানের মাদক মাফিয়া শহীদুল ইসলাম ভোদড়। তারও একই কর্মকান্ড। শিদ্ধ ডিম ব্যবসায়ী থেকে এরশাদ শিকদারের ন্যায় নির্মান করেছেন স্বর্ণ কোমল বাড়ী। কিনেছেন শত শত বিঘা জমি। হয়েছেন হাজার কোটি টাকার মালিক। রাজশাহীতেও রয়েছে একাধিক বাড়ি।
প্রশাসনের সর্বচ্চো কর্তা-ব্যক্তিরা মাদক নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন সভা সেমিনার করছেন। মাদকের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন, জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছেন।
মাদকের রাজধানী গোদাগাড়ীতে তালিকাভুক্ত ১৯৮ জন মাদক ব্যবসায়ী বীর দাপটে চলাচলা করলেও রহস্যজনক কারণে প্রশাসন রয়েছে নিরব! মাঝে মধ্যে পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও র্যাবের হাতে কেজি কেজি হোরোইনসহ মাদকের ছোট-বড় চালান আটকও হচ্ছে। তবে আটককৃতদের মধ্যে অধিকাংশই মাদক বহনকারী লেবার ও গডফাদাদের কর্মচারী। আর যেসব গডফাদাররা কোটি কোটি টাকার হেরোইন সহ বিভিন্ন মাদকের চালান নিয়ন্ত্রণ করছে তারা সব সময়ই থাকছে ধরা ছোয়ার বাইরে। পর্দার আড়ালে।
গোদাগাড়ির উল্লেখ যোগ্য মাদকের ডিলার ও গডফাররা হলো: গোদাগাড়ী থানার জনৈক শহিদুল ইসলামের নাসির। একই থানার বারুই পাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে হোসেন আলী, মাদারপুর গ্রামের আব্দুল গনি’র ছেলে গোলাম মোস্তফা টিয়া, ইসরাইলের ছেলে ইবরাহীম মহিশাল বাড়ি সাগর পাড়া গ্রামের নাজিমুল ইসলামের ছেলে রায়হান ওরফে ভদল, মহিশাল বাড়ি সাগর পাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে সনি, মহিশাল বাড়ি সাগর পাড়া গ্রামের মৃত: আবুল হোসেনের ছেলে হেলাল উদ্দিন, একই এলাকার মৃত মুরশেদ ফাটার ছেলে সাদিকুল ইসলাম।
জনৈক মোঃ মেকাইল, মোঃ গোলাম মোস্তফা, মোঃ সিরাজ, মোঃ আমিনুল ইসলাম বাবু , মোঃ আব্দুল করিম, মোঃ শফিকুল ইসলাম লুঠু, মোঃ বিপ্লব , মোঃ মইদুল ইসলাম ন্যাংড়া, মোসাঃ নুর নাহার, মোসাঃ মরিয়ম, মোসাঃ ফুরকান, মো হৃদয়, মোঃ আরিফ, মোঃ পিয়ারুল, মোঃ রবি , আনারুল হাজী , মোঃ জোহাক , মোঃ জিয়া, মোসাঃ সুইটি, মোঃ ধুলা , মোঃ মানিক , মোঃ আব্দুল্লাহ , মোঃ ভনডল , মোঃ বিসু, মোঃ সাগর ,মোঃ ইসাহাক , মোঃ নাহিদ , মোঃ টিপু , মোঃ সোহেল।
গোদাগাড়ী থানার ৬নং মাটিকাটা ইউনিয়নের প্রেমতলী, পিরিজপুর, গোপালপুর, সোনাদিঘী, কালিদিঘী সহ পুরো এলাকার মাদক সিন্ডিকেটের মূল হোতা শফিউর রহমান শুভ, শুভোর আপন ভাই সনি, উভয়ের পিতা: আব্দুল হামিদ (সাবু) , নূরু মাঝি ও তাদের সহযোগী, সুজন, সোহাগ, মশিউর, সোহাগ-২, বাকি সহ ৭/৮জন।
সরেজনি গিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ দিনের অভিযোগ গোদাগাড়ী উপজেলায় মশালবাড়িতে দিনরাত ২৪ ঘন্টাই চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। পুলিশ, ডিবি, র্যাব সহ আইনশৃঙ্খলার বাহিনীগুলো প্রতিনিয়ত অভিযান চালাচ্ছে এবং প্রচুর পরিমাণে মাদক উদ্ধার করলেও তারপরও থেমে নেই মাদক ব্যবসা। কেউ প্রকাশ্যে আবার কেউ গোপনে চালাচ্ছে মাদক কারবার।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারীরা হাতে মাদক ধরেনা। যাবতীয় লেনদেন তারা তাদের লেবার এবং কর্মচারীদের দিয়ে করিয়ে থাকেন। ফলে তারা সব সময়ই ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসব মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আর এ ভাবেই পর্দার আড়ালে থেকে মাদক নিয়ন্ত্রণকারিরা এবং মাদক কারবারিরা হয়ে উঠেছেন বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক। এরা এতই প্রভাবশালী যে, তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলবে এমন কাউকে টর্চ লাইট জ্বালিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
জানতে চাইলে জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর), মোঃ ইফতেখায়ের আলম বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স রয়েছে। চলছে অভিযান। ছাড় পাবে না কেউই। পর্যায়ক্রমে সকল তাইলকাভুক্ত মাদক কারবারিদের আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে।