রাজশাহী মহানগরীতে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও ২৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) রাত ১০টার সময় মহানগরীর বালিয়াপুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত আকরামুল হক গুড্ডু (৩৫), সে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন বড়বনগ্রাম এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে। তার ডান পায়ে গুলি লেগেছে। চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা পুঙ্গ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেয়। ফলে রাতেই একটি হেলিকপ্টারে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। তিনি স্থানীয় যুবলীগ কর্মী।
রামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক বিল্লাল উদ্দিন বলেন, একরামুল হক গুড্ডুর ডান পায়ের হাটুর উপরে গুলি লেগেছে। এর ক্ষত বড়। তাই প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। হাসপাতালে নেয়ার পর সাথে সাথে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। কিন্তু রক্ষ বন্ধ হচ্ছেনা। তাই তাকে রাতেই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
নগরীর ২৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা মুনিরুজ্জামান মনি, ও নগর ছাত্রলীগের সাবেক (বহিস্কৃত) শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক তরিকুল ইসলাম তরিক গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এলাকার আধিপত্ত বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির সাথে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তরিকুল ইসলাম তরিকের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
২৭ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনি জানায়, ৩২০০টাকার একটি বিচার মিমাংসা চলাকালে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা তরিক, সনেট, আদর দলবল চেম্বারে আসে এবং বিচারকার্যে বাধা দেয় । এসময় তাদের কাছে নিয়ে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রসহ ও মাঙ্গিজিন (পিস্তল) নিয়ে আমার চেম্বারে ঢুকে আমাকে ভয় দেখাচ্ছে আর বুলছে, তোকে মেরে আগামীতে আমরা আরেকটা কাউন্সিলর তৈরি করব। তখন আমি একটায় কথা বলেছি, চাচা আপনি কি প্রাইম মিনিস্টার (প্রধান মন্ত্রী) নাকি যে নেতা তৈরি করবেন। তখন এই কথা বলার কারণে তরিক, সনেট ও আদর ম্যাঙ্গজিন (পিস্তল) বের করে আমাকে হুমকি দিতে থাকে। তখন আমার সুভাকাঙ্খি ভাই ব্রাদার চলে আসে। তখন আমাদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয় এক পর্যায়ে তারা গোলাগুলি শুরু করে এসময় আমার সুভাকাঙ্খি গুড্ডু ভায়ের পায়ে গুলি লাগে।
আহত গুড্ডুকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রোগীর অবস্থা খারাপ। আগামী ২ ঘন্টার মধ্যে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে আপনারা দ্রুত ঢাকা পুঙ্গ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।
তিনি আরও বলে আমরা হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করেছি, ইনশাআল্লাহ খুব দ্রুতই ঢাকার উদ্দেশ্য রইনা হবো।
সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য গত ১৯ আগস্ট তরিকুল ইসলামকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হয়। কাউন্সিলরকে লক্ষ্য করে গুলি করার বিষয়টি জানতে তরিকুল ইসলাম তরিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি
স্থানীয়রা জানান, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির সাথে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তরিকুল ইসলামের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়, এতে গুড্ডু নামের এক যুবক পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়।
বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে এই মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন আহত হন। তাকে প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। কে গুলি চালিয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, এলাকার পরিবেশ এখন শান্ত। সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।