সারোয়ার জাহান বিপ্লব: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদ যে কথাটি বলেছে সেটি বিচ্ছিন্ন কোন কথা নয়। সেটা তারেক জিয়ার কথা। সেটা লন্ডন থেকে চাঁদের মাথায় ঢুকানো হয়েছে। এর পরিণতি কতটা ভয়ানক হবে, সে এখনো ভাবতে পারছে না।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদানকারী রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ -এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রতিবাদ সমাবেশ এসব কথা বলেন তিনি।
সোমবার বিকেলে মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে নগরীর রাণীবাজার মোড়ে খায়রুজ্জামান লিটনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে থেকে বিএনপি নেতা আবু সাইদ চাঁদ -এর কুশপুত্তলিকা দাহ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন খায়রুজ্জামান লিটন। বিক্ষোভ শেষে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল।
প্রতিবাদ সমাবেশে খায়রুজ্জামান লিটন আরও বলেন, ‘রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ এর পিতা রাজাকার ছিলেন। বিএনপিতে তারাই নেতৃত্ব দিবেন এটাই স্বাভাবিক। কারণ তাদের জন্মদাতা জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা হলেও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে ৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার নেপথ্যে সব ধরনের কলকাঠি নাড়েন। সামনে ছিলেন শিখন্ডী খন্দকার মোস্তাক। যাকে কাঠের পুতুলের মতো ব্যবহার করা হয়।’
আবু সাঈদ চাঁদকে রাজশাহীতে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন আরও বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক; এটি আমরা চাই। ইতোমধ্যে মামলা হয়েছে। আরো মামলা হবে। শুধু মামলা দিয়ে নয়, সে রাজশাহী শহরে এলে তাকে গণধোলাই দেয়া হবে। রাজশাহীতে আমরা এর আগেও চাঁদকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছি, আবারো অবাঞ্চিত ঘোষণা করছি।’
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘বিএনপি নামক দলটি বাংলাদেশের জন্য ক্যান্সার। এই ক্যান্সারকে বাংলাদেশ থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া দরকার। তা না হলে বাংলাদেশ স্বস্তি পাচ্ছে না। খুনি তারেক জিয়া যেমন কুসন্তান, তেমনি তারেক রহমান কুলাঙ্গার। কুলাঙ্গার তারেক জিয়া লন্ডনে বসে নানা রকম ষড়যন্ত্র করছে। স্বাধীনতার পর হত্যা, খুন ও গুমের রাজনীতি শুরু করে বিএনপি। আবারো সেই রাজনীতি করে তারা ক্ষমতায় আসতে চায়। তাদের মানুষ জ্বালাও-পোড়াও এর চিন্তা এখনো যায়নি। সুযোগ পেলে তারা আবারো জ্বালাও-পোড়াও করতে চায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘রেজা কিবরিয়ার মতো লোক আমেরিকাকে বলে ‘ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’ ভাইয়েরা, এটি কি মেনে নেওয়ার কথা? কখনোই না। ছাত্রলীগ মানে বাংলাদেশের ইতিহাস, ছাত্রলীগ মানে নতুন দেশ গড়ার কারিগর। সেই ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলার সাহস রেজা কিবরিয়া বা কতিপয় সুশীল কোথা থেকে পায়?’
সদ্য সাবেক রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘সোজা পথে নির্বাচনে এলে জনগণ ভোট দিবে না জেনে বিএনপি নানা রকম পাঁয়তারা করছে। কখনো বলে কেয়ারটেকার সরকার দিতেই হবে। কখনো বলে শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন হবে না। কখনো বলে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। এই কথাতেই উসকানির আভাস পাওয়া যায়।’
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ, আমরা সহজ-সরল মানুষ। আমরা দেশের উন্নয়ন করতে চাই। দেশ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে-এমন কোন পদক্ষেপ আমরা নিতে চাই না, কখনো নেয়ওনি। কারণ যে মা সন্তানের জন্ম দেয়, সেই মা সন্তানের কোন ক্ষতি করতে পারে না। আমরা দেশের কল্যানেই কাজ করে যাব। দেশের মানুষের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হবে এমন কোন কাজ আমরা হতে দেবো না।’